
বাংলাদেশের গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬ মিটার, আর সৌদি আরবের গড় উচ্চতা প্রায় ৬৫০ মিটার। অর্থাৎ, সৌদি আরব বাংলাদেশের তুলনায় গড়ে ৬৪৪ মিটার বা ০.৬৪৪ কিলোমিটার বেশি উঁচু।
ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা: একটি প্রাথমিক ধারণা
কোনো স্থানের ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাপা হয়, যাকে বলা হয় Mean Sea Level (MSL)। এই উচ্চতা নির্ধারণ করে সেই স্থানের জলবায়ু, তাপমাত্রা এবং পরিবেশের বৈচিত্র্য। উচ্চতা যত বেশি হয়, তাপমাত্রা সাধারণত তত কমে, আবার নিম্নভূমিতে আর্দ্রতা ও উষ্ণতা বেশি থাকে।
বাংলাদেশ: নিম্নভূমির দেশ
বাংলাদেশ একটি বিশাল বদ্বীপ অঞ্চল যা গঠিত হয়েছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর মিলনে। দেশের অধিকাংশ অংশ সমতল ও সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি।
- বাংলাদেশের গড় উচ্চতা: প্রায় ৬ মিটার (≈ ২০ ফুট)
- পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে উচ্চতা ১,০০০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে, কিন্তু দেশের অধিকাংশ এলাকা নিম্নভূমি।
তাই বাংলাদেশকে সাধারণত একটি low-lying delta country হিসেবে পরিচিত করা হয়।
সৌদি আরব: মরুভূমি ও পর্বতের দেশ
সৌদি আরবের ভূপ্রকৃতি বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বৈচিত্র্যময়। পশ্চিমে রয়েছে লোহিত সাগরের উপকূল ও পাহাড়ি অঞ্চল, পূর্বে রয়েছে পারস্য উপসাগরের উপকূলীয় সমভূমি, আর মধ্যভাগে রয়েছে বিশাল মরুভূমি।
- সৌদি আরবের গড় উচ্চতা: প্রায় ৬৫০ মিটার (≈ ২,১৩০ ফুট)
- সর্বোচ্চ পর্বত জাবাল সাওদা (Jabal Sawda), যার উচ্চতা প্রায় ৩,০০০ মিটার (৯,৮০০ ফুট)
উচ্চতার পার্থক্য: কত কিলোমিটার?
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের গড় উচ্চতার পার্থক্য বের করতে:
বাংলাদেশের গড় উচ্চতা = ৬ মিটার
সৌদি আরবের গড় উচ্চতা = ৬৫০ মিটার
সুতরাং পার্থক্য = ৬৫০ – ৬ = ৬৪৪ মিটার
কিলোমিটারে রূপান্তর করলে:
৬৪৪ / ১০০০ = ০.৬৪৪ কিলোমিটার
অর্থাৎ, গড়ে সৌদি আরব বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ০.৬ কিলোমিটার উঁচু।
তবে মনে রাখতে হবে, এটি গড় উচ্চতার পার্থক্য। সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চল বা পর্বতমালা বাংলাদেশের সমভূমি থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে।
উচ্চতার পার্থক্যের প্রভাব
এই উচ্চতার পার্থক্যের ফলে দুটি দেশের জলবায়ু, পরিবেশ ও প্রকৃতিতে স্পষ্ট ভিন্নতা দেখা যায়।
- বাংলাদেশ: আর্দ্র, উষ্ণ ও নদীসমৃদ্ধ; প্রচুর বৃষ্টিপাত ও সবুজ উদ্ভিদজগৎ।
- সৌদি আরব: শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চল; কম বৃষ্টিপাত ও উচ্চ তাপমাত্রা।
এই কারণে সৌদি আরবের প্রাকৃতিক দৃশ্য অনেক বেশি রুক্ষ ও শুষ্ক, আর বাংলাদেশের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে সবুজ ও উর্বর।
প্রাসঙ্গিক টেবিল (Quick Reference Table)
দেশ | গড় উচ্চতা (মিটার) | কিলোমিটারে রূপান্তর | বিশেষ বৈশিষ্ট্য |
---|---|---|---|
বাংলাদেশ | ৬ মিটার | ০.০০৬ কিমি | বদ্বীপ অঞ্চল, সমতল ভূমি |
সৌদি আরব | ৬৫০ মিটার | ০.৬৫ কিমি | মরুভূমি ও পর্বতময় দেশ |
পার্থক্য | ৬৪৪ মিটার | ০.৬৪৪ কিমি | সৌদি আরব বাংলাদেশের চেয়ে উঁচু |
কেন উচ্চতার পার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ?
উচ্চতা নির্ধারণ করে—
- আবহাওয়া: উচ্চতায় ঠান্ডা, নিচু অঞ্চলে গরম ও আর্দ্রতা বেশি।
- বৃষ্টি: নিম্নভূমিতে বৃষ্টিপাত বেশি হয়।
- জীববৈচিত্র্য: উচ্চতা অনুযায়ী উদ্ভিদ ও প্রাণীর প্রকারভেদ ভিন্ন হয়।
সারসংক্ষেপ (Summary)
বাংলাদেশের গড় উচ্চতা মাত্র ৬ মিটার, আর সৌদি আরবের গড় উচ্চতা প্রায় ৬৫০ মিটার। তাই সৌদি আরব বাংলাদেশের তুলনায় গড়ে ৬৪৪ মিটার (০.৬৪৪ কিমি) বেশি উঁচু। এই পার্থক্যই দুটি দেশের জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি ও পরিবেশের প্রধান ভিন্নতা সৃষ্টি করেছে।
FAQ (প্রশ্নোত্তর)
প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের উচ্চতা কত কিলোমিটার?
উত্তর: গড়ে সৌদি আরব বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় ০.৬৪৪ কিলোমিটার উঁচু।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু জায়গা কোনটি?
উত্তর: বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত তাজিংডং (৩,০০০ ফুট বা প্রায় ৯১৫ মিটার), পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থিত।
প্রশ্ন: সৌদি আরবের সবচেয়ে উঁচু জায়গা কোথায়?
উত্তর: জাবাল সাওদা (Jabal Sawda) — উচ্চতা প্রায় ৩,০০০ মিটার (৯,৮০০ ফুট)।
প্রশ্ন: উচ্চতার পার্থক্য কি জলবায়ুর ওপর প্রভাব ফেলে?
উত্তর: হ্যাঁ, উচ্চতার পার্থক্য জলবায়ুর তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও বৃষ্টিপাতের তারতম্যে প্রভাব ফেলে।
Leave a Reply